Ads

ভয়ংকর কালো জাদুর গল্প

কালো জাদুকরের গল্প ১

একটি প্রত্যন্ত গ্রামে এক বুড়ো কালো জাদুকার বসবাস করতো। লোকেরা বলতো, সে নাকি অন্ধকার শক্তির অধিকারী, যার মাধ্যমে সে যেকোনো কিছু ঘটাতে পারতো। গ্রামের লোকেরা তাকে ভয় পেতো এবং কেউই তার সাথে কোনো সম্পর্ক রাখতে চাইতো না।


একদিন, গ্রামের প্রধানের কন্যা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লো। কোনো ডাক্তার বা ওষুধ তাকে ভালো করতে পারছিল না। প্রধান বাধ্য হয়ে কালো জাদুকারের কাছে সাহায্য চাইতে গেলেন। জাদুকার প্রধানকে বললেন, "আমি তোমার কন্যাকে সুস্থ করতে পারি, কিন্তু তার জন্য তোমাকে বড়ো মূল্য দিতে হবে।"

প্রধান তার মেয়ে বাঁচানোর জন্য সব কিছু করতে রাজি হয়ে গেলেন। কালো জাদুকার একটি জাদুকরী পানীয় তৈরি করে প্রধানের মেয়েকে খাওয়ালেন। মেয়েটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলো, কিন্তু রাত গভীর হতেই প্রধানের বাড়িতে ভয়াবহ ঘটনাগুলি ঘটতে শুরু করলো।

প্রধান দেখলেন তার মেয়ে রাতের আঁধারে উঠে এসে অদ্ভুত আচরণ করছে। তার চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে, এবং সে অজানা ভাষায় কথা বলছে। গ্রামবাসীরা বলল, জাদুকার প্রধানের কন্যার শরীরে কোনো অশুভ শক্তি প্রবেশ করিয়েছে।

গ্রামের লোকেরা একত্রিত হয়ে জাদুকারের কাছে গেলেন এবং তাকে তাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বললেন। জাদুকার হেসে বললেন, "তোমাদের অনুরোধে আমি তোমাদের সাহায্য করেছি, এখন আমাকেই তাড়াতে চাও?" এরপর তিনি উধাও হয়ে গেলেন।

কিন্তু প্রধানের কন্যার অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকলো। এক রাতে, প্রধান মেয়ের ঘরে ঢুকে দেখলেন, মেয়ে বিছানায় নেই। মেয়েটি বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে রয়েছে, আর তার পেছনে কালো জাদুকার দাঁড়িয়ে হাসছে।

প্রধান ভয় পেয়ে মেয়েকে টেনে আনতে গেলেন, কিন্তু হঠাৎই তিনি দেখতে পেলেন তার মেয়ের চোখে কেমন অদ্ভুত আলোর ঝলকানি। জাদুকার বলল, "তোমার কন্যা এখন আমার নিয়ন্ত্রণে। তোমার জন্য আমার মূল্য এখনও শেষ হয়নি।"

সে রাতের পর থেকে প্রধান আর তার মেয়েকে কেউ দেখতে পায়নি। গ্রামের লোকেরা বলেন, কালো জাদুকার তার প্রাপ্য নিয়ে চলে গেছে। সেই গ্রামের উপকথায় এখনও সেই কালো জাদুকারের গল্প শোনা যায়, আর লোকেরা রাতের বেলায় অন্ধকারে ঘরের বাইরে যেতে ভয় পায়।

কালো জাদুকরের গল্প ২

এক প্রত্যন্ত গ্রামের নাম হলো রানাঘাট। সেখানে একসময় রাজকুমারী সোমার রাজত্ব ছিল। রাজকুমারী সোমা ছিলেন অন্ধকার জাদুবিদ্যার এক বিশিষ্ট পণ্ডিত। গ্রামের লোকেরা তাঁকে ভয় পেতো এবং তাঁর কাছাকাছি আসতে সাহস করতো না।

একদিন, গ্রামের এক যুবক, রাহুল, নিজের বোনের অদ্ভুত অসুখের কারণে রাজকুমারী সোমার সাহায্য চাইতে গেলেন। তাঁর বোন হঠাৎ করেই অদ্ভুত আচরণ করতে শুরু করেছিল। কখনও সে অজানা ভাষায় কথা বলতো, কখনও নিজের শরীরে নিজেই আঘাত করতো। স্থানীয় ডাক্তার এবং ওঝারাও তাঁকে সুস্থ করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

রাহুল রাজকুমারী সোমার প্রাসাদে পৌঁছালেন এবং তাঁর বোনের জন্য সাহায্য চাইতে লাগলেন। রাজকুমারী সোমা প্রথমে তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন, কিন্তু রাহুলের বারবার অনুরোধে অবশেষে তিনি রাজি হলেন। সোমা একটি বিশেষ পানীয় তৈরি করলেন এবং রাহুলের বোনকে খাওয়ানোর পরামর্শ দিলেন। তবে একটি শর্ত ছিল—রাত ১২টার পর কোনোভাবেই তাকে ঘরের বাইরে যেতে দেয়া যাবে না।

রাহুল সেই শর্ত মেনে পানীয়টি তাঁর বোনকে খাওয়ালেন। কিছুক্ষণ পরেই তাঁর বোনের অদ্ভুত আচরণ বন্ধ হয়ে গেল এবং সে সুস্থ হয়ে উঠলো। রাহুল খুব খুশি হলেন এবং রাজকুমারী সোমাকে ধন্যবাদ জানাতে আবার প্রাসাদে গেলেন।

কিন্তু গ্রামের লোকেরা বলাবলি করতে লাগলো, যে রাজকুমারী সোমা তাঁর কালো জাদুর মাধ্যমে রাহুলের বোনকে সুস্থ করেছেন, কিন্তু তাঁকে এর জন্য বড়ো মূল্য দিতে হবে।

রাত ১২টা বাজতেই রাহুলের বোনের ঘরে অদ্ভুত শব্দ হতে শুরু করলো। রাহুল দেখতে পেলেন তাঁর বোন বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে এবং জানালার দিকে হাঁটছে। হঠাৎই জানালা খুলে গেল এবং রাহুলের বোন অদৃশ্য হয়ে গেল।

রাহুল ভয় পেয়ে রাজকুমারী সোমার প্রাসাদে ছুটে গেলেন। সোমা তাঁর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, "আমি তোমার বোনকে সুস্থ করেছি, কিন্তু এর জন্য তোমাদের পরিবারের একটি জীবন আমাকে দিতে হবে।"

রাহুল নিরাশ হয়ে ফিরে এলেন, কিন্তু প্রাসাদের বাইরে তাঁর বোনকে পেলেন না। তিনি বুঝতে পারলেন যে, তাঁর বোনকে কালো জাদুর মাধ্যমে চিরতরে হারিয়ে ফেলেছেন।

সেই রাত থেকে রাহুলের পরিবার এবং গ্রামবাসীদের মধ্যে একটি অদ্ভুত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো। গ্রামের লোকেরা বিশ্বাস করতে লাগলো, যে রাজকুমারী সোমার কালো জাদুর ফলে তাঁদের পরিবারে অশুভ শক্তি প্রবেশ করেছে।

গ্রামের উপকথায় এখনও এই ঘটনা শোনা যায়, এবং লোকেরা বলেন, "রাত ১২টার পর রানাঘাটে কোনো অদ্ভুত ঘটনা ঘটলে, বুঝতে হবে, রাজকুমারী সোমার কালো জাদু এখনও চলছে।"

কালো জাদুকরের গল্প ৩

একদিন, শহর থেকে একজন তরুণ গবেষক, রাহুল, গ্রামে আসে। সে কালো জাদু এবং অতিপ্রাকৃত ঘটনা নিয়ে গবেষণা করত। গ্রামের প্রবীণরা তাকে সাবধান করে দেন সেই মন্দিরে না যাওয়ার জন্য, কিন্তু রাহুল তার কৌতূহল সংবরণ করতে পারেনি। সে সিদ্ধান্ত নেয়, মন্দিরের ভেতরে গিয়ে ঘটনার সত্যতা অনুসন্ধান করবে।

মধ্যরাতে রাহুল মন্দিরে প্রবেশ করে। মন্দিরের ভেতরে ঢুকে সে দেখতে পায়, সেখানে প্রচুর তান্ত্রিকের সরঞ্জাম এবং কালো জাদুর চিহ্ন রয়েছে। হঠাৎই সে অনুভব করে, যেন কেউ তার পিছনে দাঁড়িয়ে আছে। সে ঘুরে তাকাতেই দেখে, এক কালো ছায়া ধীরে ধীরে তার দিকে এগিয়ে আসছে। রাহুল ভয়ে পিছু হটে, কিন্তু ছায়াটি তাকে ঘিরে ধরে।

রাহুল অনুভব করে, কালো ছায়াটি তার মধ্যে প্রবেশ করছে এবং তাকে তার নিয়ন্ত্রণে নিচ্ছে। তার মনে পড়ে যায় গ্রামের প্রবীণদের কথা। তারা বলেছিল, তান্ত্রিক কালেশ্বরের আত্মা এখনও মন্দিরে বিরাজ করছে এবং যে কেউ সেখানে প্রবেশ করলে তাকে অভিশপ্ত করে দেবে। রাহুল বুঝতে পারে, সে কালেশ্বরের আত্মার শিকার হয়েছে।

রাহুল তার সমস্ত শক্তি দিয়ে কালো ছায়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকে। সে মনে মনে প্রার্থনা করতে থাকে এবং সেই তান্ত্রিকের সরঞ্জামগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা করে। কিন্তু কালো ছায়াটি ক্রমশ তার উপর আধিপত্য বিস্তার করে। রাহুল বুঝতে পারে, তার পালানোর সময় খুব কম।

রাহুলের মনে পড়ে, গ্রামের প্রবীণরা বলেছিল, কালো জাদুর শক্তি ধ্বংস করার জন্য প্রাচীন মন্ত্রপাঠ করতে হবে। সে তাড়াতাড়ি মন্দিরের এক কোণে থাকা পুরনো শাস্ত্রগুলি খুঁজে বের করে এবং মন্ত্রপাঠ শুরু করে। মন্ত্রপাঠের সাথে সাথে মন্দিরের চারপাশে প্রবল ঝড় উঠে এবং কালো ছায়াটি চিৎকার করে ওঠে।

মন্ত্রপাঠের শেষ মুহূর্তে, কালো ছায়াটি ধীরে ধীরে ম্লান হতে শুরু করে এবং একটি ভয়ংকর শব্দে বিস্ফোরিত হয়ে যায়। মন্দিরের ভেতরে সমস্ত সরঞ্জাম পুড়ে যায় এবং কালো জাদুর শক্তি ধ্বংস হয়ে যায়। রাহুল অবশেষে মুক্ত হয় এবং দ্রুত মন্দির থেকে পালিয়ে আসে।

গ্রামের মানুষজন রাহুলের সাহসিকতার গল্প শুনে তাকে সম্মানিত করে। তারা মন্দিরটিকে পবিত্র করার জন্য একটি পূজা আয়োজন করে এবং সেখানে আবার শান্তি ফিরে আসে। রাহুল তার অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লেখে, যা পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

এই কালো জাদুর গল্প আমাদের শেখায়, অতিপ্রাকৃত ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার সাহস থাকলেও, তাদের পরিণাম হতে পারে ভয়ানক এবং অজানা। কালো জাদুর ভয়ংকর ছায়ার গল্প আপনাদের জন্য একটি ভয়ংকর অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
কমেন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন

এ.আর.আরিফিন নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১